ছাগলনাইয়ায় ধর্ষণ মামলায় ইউপি সদস্যসসহ গ্রেফতারকৃত ৫ জনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। আজ বুধবার (৭ অক্টোবর) ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের ছাগলনাইয়া আমলী আদালতে হাজির করলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছাগলনাইয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত (ওসি) মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, আজ সকালে তাদের আদালতে হাজির করে ছাগলনাইয়া থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত তিন পুরুষ আসামীর ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করার কথা ছিল। কিন্তু রিমান্ডের অনুমতির কাগজপত্র পৌঁছানোর আগেই আদালতের সময় শেষ হয়ে যায়। তাই আজ রিমান্ডের শুনানী করা যায় নি। মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ ১২ অক্টোবর রিমান্ড শুনানী করা হবে।

মঙ্গলবার রাতে এ মামলায় প্রধান আসামী উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের সত্যনগর গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে ফজলুল করিম বাবুসহ (২৪) তার মা রেজিয়া বেগম (৫২), বোন রাবিয়া আক্তার মুক্তা (১৮) ও  সালিশদার আবুল হোসেন (৪৫) ও স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল করিম চৌধুরী প্রকাশ সবুজ মেম্বার (৩৭) কে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এর আগে ওইদিন সন্ধ্যার দিকে ওই নারী বাদী হয়ে থানায় ৮ জনকে আসামী করে আরও অজ্ঞাত ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১)/৩০ ধারায় ছাগলনাইয়া থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামীরা হচ্ছে মুসা (৬০), মনির চৌধুরী (৬২) ও নুরুল ইসলাম (৫৫)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফজলুল করিম বাবু এলাকার এক তরুণীর সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে জড়ান। এর ফলে সে ৬ মাসের অন্তস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি বাবুকে জানালে গর্ভের বাচ্চাটি বিনষ্ট করতে ও বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর বিয়ের দাবীতে গত ২ অক্টোবর মাকে নিয়ে তরুণীটি বাবুর বাড়িতে উপস্থিত হয়। তখন বাবু, তার মা ও বোন মিলে তাদের মারধোর করে বাড়ি হতে বের করে দেয়। সর্বশেষ গত ৬ অক্টোবর সকাল ১১টায় আবুল হোসেন ও নুরুল ইসলাম সবুজ মেম্বারসহ আরও অজ্ঞাত ৫/৬ জন তরুণীদের বাড়ীতে এসে বিষয়টি সালিশ-মীমাংসার মাধ্যমে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করে।

জানা গেছে, ওই তরুণীটির সাথে বাবুর ৩ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলতি বছরের মার্চ মাসের ২৩ তারিখ বাবু ওই মেয়ের বাড়িতে এসে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করেন। এরপরও বেশ কয়েকবার তারা শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন।

মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, মামলায় ফজলুল করিম প্রকাশ বাবুর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অন্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগ করেছেন ওই নারী।

ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, এ মামলার বাকী ৩ আসামী পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতার করতে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

অন্যদিকে ইউপি মেম্বার সবুজকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি সাংবাদিকদের ‘দেখে নেবার’ হুমকি দিয়েছেন।