সোনাগাজীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নবম শ্রেণী পড়ুয়া প্রেমিকাকে ধর্ষণ করেছিল আরিফুল ইসলাম সাকিব নামে এক যুবক। কিন্তু প্রেমিকার উপর চাপ প্রয়োগ করে থানায় ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ এনে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এল ঘটনার আসল রহস্য। পরে তার প্রেমিকার দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় সাকিব নিজেই এখন আসামী হয়ে কারাগারে।

আজ সোমবার (১৮ অক্টোবর) তাকে আদালতে আনা হলে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। সাকিব উপজেলার সদর ইউনিয়নের সুজাপুর গ্রামের সারেং বাড়ির মৃত আবুল কাশেমের ছেলে।

সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম পলাশ জানান, বৃহস্পতিবার ওই স্কুল ছাত্রী তাকে ১১জন মিলে গণধর্ষণ করেছে বলে থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ অভিযোগটি তদন্ত করে জানতে পারে, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে প্রেমিক সাকিবসহ এলাকার কয়েকজন ব্যক্তির প্ররোচণায় বাধ্য হয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেছে মেয়েটি। এর প্রেক্ষিতে শনিবার রাতে সাকিবকে আটক করে পুলিশ।

ওসি আরও জানান, থানায় অভিযোগ দেবার পর স্কুল ছাত্রীকে প্ররোচিত করে ১১জন মিলে তাকে ধর্ষণ করেছে এমন ভিডিও তৈরী সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মানুষের কাছে প্রেরণ করে সাকিব। ব্যাপারটি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় ওই ছাত্রীকে পুলিশি হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে সবকিছু স্বীকার করে। পরে সে স্বেচ্ছায় তাকে বিয়ের প্রলোভনে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ধর্ষণ করেছে উল্লেখ করে রবিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯ (১) ধারায় সাকিবের নামে মামলা দায়ের করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মডেল থানার উপপরিদর্শক এয়াকুবুর রহমান জানান, আজ বিকালে তাকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানী শেষে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শারীরিক পরীক্ষা শেষে একই আদালতে ২২ ধারায় ওই কিশোরীর জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, সাকিবের সাথে ওই কিশোরী মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ের কথাবার্তাও হয়েছিল। গত ২৮ সেপ্টেম্বর বাড়ীতে কেউ না থাকায় সাকিব রাত ১১টার দিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় এলাকার কয়েকজন যুবক তাদেরকে দেখে চিৎকার শুরু করলে সে সটকে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার কয়েক ব্যক্তির যোগসাজশে সাকিব মেয়েটির উপর চাপ প্রয়োগ করে। মামলা না করলে সে তাকে বিয়ে করবেনা বলে হুমকি দেয়। সম্পর্ক রক্ষায় কিশোরী ওই যুবকদের নামে থানায় ধর্ষনের অভিযোগ করতে বাধ্য হয়।

স্থানীয়রা আরও জানায়, সাকিব একজন বখাটে। কয়েক বছর আগেও সে এক প্রবাসীর স্ত্রী নিয়ে অনৈতিক কার্যকলাপ করার সময় ফেনী স্টেশন রোডের একটি হোটেলে ধরা পড়েছিল।