ব্যবসায়ীদের নৈতিকতা ঠিক না থাকলে শুধুমাত্র জেল, জরিমানা করে ভেজাল রোধ করা সম্ভব নয়। ব্যবসায়ীদের নীতি ও নৈতিকতা মানতে হবে। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত আইন-২০০৯ বিষয়ে আয়োজিত সেমিনারে এমন মত প্রকাশ করেছেন বক্তারা।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান বলেন, বাইরের দেশের মানুষ সব রকমের অখাদ্য খেয়েও ৯০ বছর বাঁচে। আমরা ভেজাল খাদ্য খেয়ে খেয়ে ৪০ বছরের পর থেকে ওষুধের সাহায্য ছাড়া চলতে পারিনা। এসময় উপস্থিত সকল ব্যবসায়ীর কাছে অনুরোধ করে জেলা প্রশাসক বলেন, নিজেরা নৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হই। এসব ভেজাল খাদ্য বিক্রি বন্ধ করি।

ব্যবসায়ীদের নীতি-নৈতিকতার পরিবর্তন করার আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ব্যবসায়ীদের আগে নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে। আমি খাদ্য ভেজাল মেশাবো না, মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার রাখবো না, অধিক লাভে পণ্য বিক্রি করবো না- ব্যবসায়ীদের এই মানসিকতা থাকতে হবে।

সেমিনারে ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী বলেন, শুধুমাত্র জরিমানা করে ভেজাল রোধ করা সম্ভব নয়। মেয়াদোত্তীর্ণ, ভেজাল খাদ্য বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র জরিমানা না করে আইনের সঠিক প্রয়োগ ও বাবহারের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, বড় বড় কোম্পানীগুলোর প্যাকেটে ওজনে কম থাকে। কিন্তু ভুক্তভোগী হয় ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীরা। কোন কোন ব্যবসা আছে যাদের জরিমানা দেবার সামর্থ্য থাকে না। আবার অনেককে জেল জরিমানা করা হলেও আগের মতই অনিয়ম করতে থাকে।

সভায় এ বিষয়ে একমত প্রকাশ করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোছাঃ সুমনী আক্তার বলেন, নৈতিকতার চর্চা বৃদ্ধি করা ছাড়া ভোক্তা অধিকার আইন দিয়ে এসব অনিয়ম বন্ধ করা সম্ভব নয়। সকল ব্যবসায়ীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সৎ থাকার অনুরোধ জানান তিনি।

আলোচনা সভার আগে ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ফেনীর সহকারী পরিচালক সোহেল চাকমা ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত আইন-২০০৯ এর নানা দিক ও এর প্রয়োগ উপস্থাপন করেন।

আলোচনা সভায় ফেনী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আর এস এম মাসুদ রানা, সিভিল সার্জন অফিসের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ইসতাব রাকিন, জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং একাধিক ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।