ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের ফকিরহাটে চাঞ্চল্যকর আমজাদ হোসেন বাবলু হত্যা মামলার একমাত্র আসামী মোঃ ইউছুপকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছে আদালত। আজ রবিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছা ৩০২ ধারায় এ রায় ঘোষণা করেন। একই সাথে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও একমাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামী ইউছুপ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

তবে মামলার রায়ে সন্তুষ্ট নন মামলার বাদী নিহত বাবলুর ভাই আমির হোসেন রিপন। তিনি জানান, দীর্ঘ ৬ বছর ১৯ দিনের মাথায় এ মামলার রায় প্রদান করা হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম ইউছুপের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি হবে। রায়ের কপি পেলে আইনজীবীদের সাথে আলাপ করে উচ্চ আদালতে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী জাহিদ হোসেন খসরু জানান, এ মামলায় আসামী স্বীকারোক্তি দিয়েছে। এছাড়া ১২জন সাক্ষী মামলার স্বপক্ষে স্বাক্ষ্য দিয়েছে। আমরা আসামির বিরুদ্ধে আদালতে তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করতে সমর্থ হয়েছি। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম আসামীর মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হবে। মামলার রায়ের কপি হাতে পেলে উচ্চ আদালতে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

আসামী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট করিমুল হক দুলালও এ রায়ে সন্তুষ্ট নন। তিনি বলেন, রায়ের কপি হাতে পেলে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

রায়ে সন্তুষ্ট মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) এডভোকেট হাফেজ আহম্মদ তিনি। জানান, গত ১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক শেষে আজ রায়ের দিন ধার্য করা হয়। আসামী আবু ইউছুফের জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করে আদালত। তিনি আরো জানান, এ মামলায় বাদী আমির হোসেন রিপন, রফিকুল ইসলাম সাহেদ, খোরশেদ আলম সুজন, ইকবাল হোসেন, একরামুল হক বাবুল, সামছুদ্দীন, মোমিনুল ইসলাম, তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গোলাম কিবরিয়া, এসআই সাজিদ কামাল, ডাঃ প্রদীপ কুমার, বিচারক আলমগীর মোহাম্মদ ফারুকী, পুলিশ কন্সটেবল জসিম উদ্দিনসহ ১২ সাক্ষ্য দিয়েছেন। রবিবার ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আদালত আসামী মোঃ আবু ইউছুফকে পরীক্ষা করেন। এসময় ইউছুফ নিজেকে নির্দোষ দাবী করেন।

এর আগে ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর প্রকাশ্যে ফকিরহাট বাজারে বাবলুকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনায় তার বড় ভাই আমির হোসেন রিপন বাদী হয়ে একইদিন ফেনী মডেল থানায় কাতালিয়া গ্রামের মৃত সুলতান আহাম্মদের ছেলে মোঃ ইউছুপকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে আসামী ইউছুপকে গ্রেফতার করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর মামলাটি তদন্ত করে পরে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট অভিযোগ গঠন হয়।