দেখতে শসার মত কুমড়া জাতীয় সুস্বাদু ও পুষ্টিকর স্কোয়াশ ফেনীতে উৎপাদিত হচ্ছে। কৃষিবিদরা বলছেন, লাভজনক এ শস্যটি ফেনীর কৃষিতে যোগ করছে নতুন সম্ভাবনার। অপ্রচলিত এ সবজি চাষের উদ্যোক্তা নুরুল আফছার একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। নিজ বাড়ি সোনাগাজী পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের চরচান্দিয়ায় গড়ে তোলা উদ্যোগের নাম দিয়েছেন রহমান এগ্রো। আপন ভাই শহিদুল্লাহ কাওছারসহ গড়ে তোলা উদ্যোগটি বড় আকারে নিয়ে যেতে তৈরি করছেন নতুন পরিকল্পনা।

ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রভাষক আফছার জানান, মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ দিনে স্কোয়াশের ফলন পাওয়া যায়। ফেনীর স্থানীয় বাজারে এ মুহূর্তে সবজির দর নিম্নমুখী হলেও উৎপাদন ব্যয়ের তুলনায় আয়ের পরিমান ছয় গুণ বেশী।

সোনাগাজী পৌর এলাকায় দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র নাথ জানান, রবি শস্যটি অপ্রচলিত হলেও খুবই লাভজনক। প্রতি গাছ থেকে গড়ে ১০টি ফলন হতে পারে। মানুষ এ সম্পর্কে জানতে পারলে বড় বাজার সৃষ্টি সম্ভব।

সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার জানান, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর স্কোয়াশ ফেনীর কৃষিতে নতুন যোগ হল। এর দামও ভাল, বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদে কৃষক আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হবে।

নুরুল আফছার জানান, করোনাকালের শুরুতে বাড়িতে ছিলেন। সেসময় ছাদবাগানে ঝুঁকে পড়েন। কৃষি নিয়ে উৎসাহ থেকে কৃষিভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল এবং গ্রুপ, পেইজ হতে কৃষি জ্ঞান নেয়ার চেষ্টা করেন। বাড়ির পাশে ৪৫ শতক জায়গায় প্রাথমিকভাবে স্কোয়াশ, ক্যাপসিকাম ও ব্রকলি করার পরিকল্পনা থাকলেও কৃষিবিদদের পরামর্শক্রমে স্কোয়াশ ও ক্যাপসিকাম চাষে মনস্থির করেন। ২০ শতক জায়গায় ১২শ গাছের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শুরু করেন স্কোয়াশ চাষ।

তিনি জানান, নভেম্বরের প্রথম সাপ্তাহে চারা অথবা বীজ বপনের সঠিক সময় হলেও এক মাস পিছিয়ে যান। বগুড়া হতে ৭শ চারা সবমিলে সাড়ে ৫ টাকা করে কেনেন। ৫শ বীজ কেনেন ঢাকা থেকে। ৪০ দিনের মাথায় গতকাল রবিবার (১৭ জানুয়ারি) একশ কেজির বেশী ফলন মাঠ হতে সংগ্রহ করেন। ফেনীর পাইকারি বাজারে বিক্রি করেছেন কেজি প্রতি ২০টাকায়।

এমন অপ্রচলিত সবজি চাষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এমন কিছু চাইছিলাম যা মানে গুণে এবং আর্থিকভাবে অনেক বেশি লাভবান করবে।

ছাদবাগান প্রেমী নুরুল আফসার জানান, বাড়ির ছাদে রয়েছে টমেটো, গাজর, আম, লিচুসহ নানাজাতের ফল ও সবজি।

তিনি জানান, স্কোয়াশ এমন একটি উদ্ভিদ যা সারা বছরই পাওয়া যায়। এটি উদ্ভিদগতভাবে একটি ফল হিসেবে বিবেচিত হলেও, মসৃণ ত্বক, ছোট বীজ এবং মাংসল শাঁস এর জন্য এটিকে সবজি হিসেবে গণ্য করা হয়। ফেনী, নোয়াখালী অঞ্চলে অনেকের কাছে এটি কুছা হিসেবেও পরিচিত। এটি দক্ষিণ আমেরিকার জনপ্রিয় একটি খাদ্য।