কানায় কানায় ভরে গেছে ফেনী সদরের ধর্মপুরের জোয়ার কাছাড়ের পুরো মাঠ। উপচে পড়া ভীড় যেন প্রকাশ করছে তার প্রতি মানুষের নিখাদ শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দলমত, ভেদ-বিভেদ ভুলে সবাই বিনম্র শ্রদ্ধার সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়েছেন। শোকে বিহ্বল সর্বস্তরের মানুষের চেতনায় নাড়া দিয়ে চির প্রস্থান করলেন সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, জেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সদস্য নন্দিত রাজনীতিবিদ এম.আজহারুল হক আরজুকে।

একজন মাইকে ঘোষণা দিলেন,"জানাজার সময় হয়ে গেছে, দেখা বন্ধ করে দেন।’ দেখার লাইনে অপেক্ষমাণ হাজার হাজার মানুষ একসাথে হাত নেড়ে মানা করলেন "নাআআ", আমরা আমাদের প্রিয় মানুষটাকে একটি বার দেখতে চাই।

আজ শুক্রবার (৫ মার্চ) বাদ আছর জোয়ার কাছাড় নিজ গ্রামের বাড়ির সংলগ্ন মাঠে জানাযা শেষে বটুয়া দিঘির পাড় পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে চির শয্যায় শায়িত করা হয়েছে আরজুকে। ফুলে ফুলে ঢাকা পড়েছে তার কবর।

সাংসদ, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, জনপ্রতিনিধি,পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, গ্রামবাসীসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ এসেছিলেন তাকে শেষ বিদায় জানাতে। তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানায় ফেনী-২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোতাহার হোসেন সোহাগের সঞ্চালনায় জানাযার পূর্বে মরহুমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী। এসময় আরজুর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান সাংসদ।

আরও বক্তব্য রাখেন ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকম।

পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই মাজহারুল হক সুমন বলেন, ভাই এতদিন আমাদের মাঝে ছিল। আমার এখন আর ভাইকে পাব না। ভাইয়ের যে স্মৃতি ভালোবাসাগুলো আমাদের চলতে সাহস যোগাবে। তিনি সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আরজুর জন্য দোয়া কামনা করেন করেন।

 

আরও বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) এডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার মজুমদার তপন, ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন শাখা, আরজুর বড় ভাই আনোয়ারুল হক স্বপন।

এছাড়াও জানাযায় উপস্থিত ছিলেন ফেনীর সকল উলজেলার চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, ইউপি পরিষদ চেয়ারম্যানরা। জানাযায় বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারাও অংশ নেন। 

এর আগে আজ শুক্রবার (৫ মার্চ) ভোর ৫ টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন এই রাজনীতিবিদ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৯ বছর। মৃত্যুকালে তিনি এক ছেলে, আত্মীয় স্বজন, অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।