নির্ধারিত তারিখে সাক্ষাতকার দিতে আসেন নি ৮৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। যাচাই-বাছাইয়ের পর ফেনী হতে ২৪৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সুপারিশসহ তালিকা প্রেরণ করেছেন ফেনীর ছয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। গত মাসের ৬ হতে ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) প্রেরিত তালিকাভূক্ত ৩৫৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাতকার নেয়া হয়। এসব তথ্য নিশ্চিত করে জেলার ছয় ইউএনও কার্যালয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর জামুকা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জামুকার অনুমোদন ব্যতীত মুক্তিযোদ্ধাদের যেসব বেসামরিক গ্যাজেট প্রকাশিত হয়েছে, প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশের অংশ হিসেবে সেসব বেসামরিক গ্যাজেট যাচাই-বাছাই করা হবে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৩৫৭ জনের মধ্যে সাক্ষাতকারে অংশ নেন ২৬৮জন। এরমধ্যে ১৩ জনকে নামঞ্জুর ও ১২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার বিষয়ে স্বাক্ষীগণ ও কমিটি দ্বিধা বিভক্ত হন। এছাড়া ফুলগাজীর তালিকায় ৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম ভিন্ন উপজেলা হতে ভুলবশতঃ যুক্ত হয়।

প্রাপ্ত তথ্যে, উপজেলাভিত্তিক দেখা যায়, ছাগলনাইয়ায় ৯৭ জনের মধ্যে ৬১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাক্ষাতকারে অংশ নেন। এরমধ্যে একজনের বিষয়ে দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্ত হয়। বাকী ৩৬ জন সাক্ষাতকার দিতে আসেন নি। প্রতিবেদনে ৬০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে সুপারিশ করা হয়।

সোনাগাজীতে ৯৫ জনের মধ্যে ৮৩ জন সাক্ষাত দেন। এরমধ্যে ৩ জনকে নামঞ্জুর করা হয়, একজনের বিষয়ে দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্ত হয়। ১২ জন সাক্ষাতকার দেননি।

দাগনভূঞায় ৬১ জনের মধ্যে ৩৮ জনের নাম সুপারিশ করা হয়েছে। সাক্ষাতকার দেননি ১৪ জন এবং দ্বিধাবিভক্তি ও নামঞ্জুর করা হয়েছে ৯ জন।

ফুলগাজীতে ৫২ জনের মধ্যে ৩৩ জনের নাম সুপারিশ করা হয়েছে। অনুপস্থিত ছিলেন ১০ জন, দ্বিধাবিভক্তি হয়েছে ৬ জনের ব্যাপারে।

পরশুরামে ১৫ জনের মধ্যে ১১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম যাচাই-বাছাইয়ের পর সুপারিশ করা হয়েছে।

ফেনী সদরে ৩৭ জনের মধ্যে ২২ জনকে মঞ্জুর করে সুপারিশ করা হয়েছে। অনুপস্থিত ছিলেন ১১ জন, নামঞ্জুর হয়েছেন ৪ জন।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন সুলতানা জানান, যাচাই-বাছাইয়ের ৪ সদস্যের কমিটিতে জামুকা প্রতিনিধির সভাপতিত্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন। এছাড়া একজন স্থানীয় সংসদের প্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসকের একজন প্রতিনিধি কমিটিতে রয়েছেন।

সাক্ষাত না দেয়া প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি। এখন তিনজন সাক্ষী নিয়ে প্রমাণ করতে হবে আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি। স্বাধীনতার এত বছর পরে এসে এটি অপমানজনক।

যাদের নাম সুপারিশ করা হয়নি এবং অনুপস্থিত ছিলেন তাদের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে কোনো চিঠি পান নি বলে জানান পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াছমিন আক্তার জানান।

তবে চলতি মাসের ২ তারিখ জামুকা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানায়, যাচাই-বাছাই প্রতিবেদনে দ্বিধাবিভক্ত, নামঞ্জুর, সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ও উত্তরাধীগণ এপ্রিলের ১ তারিখ হতে ৩১ মে পর্যন্ত নির্ধারিত ফরমে আপিল আবেদন করতে পারবেন।