বন্যার পানির চাপ এবং মুছাপুর রেগুলেটর বিলীনের প্রভাবে সোনাগাজীর চরদরবেশ ইউনিয়নের উত্তর চরসাহাভিকারী এলাকায় একটি ব্রিজ ভেঙে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক গ্রামের অন্তত বিশ হাজার মানুষ। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় সরাসরি কাজিরহাট-কারামতিয়া হয়ে সোনাগাজী যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবহার করতে হচ্ছে বিকল্প পথ। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন স্কুল শিক্ষার্থী, অসুস্থ রোগী ও বৃদ্ধরা।

স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার (২৪ আগস্ট) বন্যার পানির চাপে ব্রিজের উত্তর পাশের মাটি সরে যায়। এরপর ২৬ আগস্ট মুছাপুর রেগুলেটর বিলীন হওয়ার পর ছোট ফেনী নদী থেকে সরাসরি জোয়ারের পানি খালে প্রবেশ করলে দক্ষিণ পাশ থেকেও মাটি সরে যায়। এতে ব্রিজটি খালে ধ্বসে পড়ে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রেগুলেটর না থাকায় প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানি ঢুকে খালের পাড়সহ রাস্তা ভাঙছে। এতে অনেকের খামারসহ ঘর-বাড়ি বিলীন হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুইপাশের সড়ক ভেঙে ব্রিজটি খালের পানিতে ডুবে আছে। মুছাপুর দিকে থেকে ছোট ফেনী নদীর পানি খালে ঢুকে কয়েক মিনিট পরপর পাড় ভেঙে খালে প্রবেশ করছে। এতে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। এই এলাকায় কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে চারটি। চলাচলের পথ সুগম করতে স্থানীয় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো তৈরী করেছে।

মোটরসাইকেল চালক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আগে কাজীর হাট থেকে এই ব্রীজ দিয়ে কেরামতিয়া হয়ে সোনাগাজী সহজে যাতায়াত করা যেত। ব্রিজটি পানির চাপে ভেঙে যাওয়ায় এখন এ পথে চলাচল বন্ধ। এখন বিকল্প পথ দিয়ে ঘুরে ২ মিনিটের রাস্তা যেতে প্রায় আধা ঘণ্টা সময় লাগছে।

স্থানীয় আহসান উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি জানান, ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় বাজারের পণ্যবাহী গাড়ীগুলো অনেক দূর দিয়ে ঘুরে আসতে হবে। যার ফলে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাবে এবং পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে। তাই ব্রিজ দ্রুত পুনঃনির্মাণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে।

নাঈম উদ্দিন নামের স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, ৩৫ বছর আগে ইলিয়াস চেয়ারম্যানসহ আমরা ৭জন মিলে ব্রিজটির করার দায়িত্ব নিই। এর আগে এখানে প্রথমে কাঠের ব্রিজ ছিলো। এরপর সেটি ভাঙার পর বাঁশের সাঁকো করা হয়। তারপর আমাদের প্রচেষ্টায় পর্যায়ক্রমে ব্রিজটি হয়। এখন ব্রিজটি চলাচলের মতো অবস্থায় নেই। আবার আগের মতো বাঁশের সাঁকো দিয়ে এলাকাবাসীকে চলাচল করতে হবে। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমাতে হলে প্রথমে মুছাপুর রেগুলেটর ও এরপর আমাদের ব্রিজটি পুনঃনির্মাণ করতে হবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল কাদের মোজাহিদ বলেন, ইতোমধ্যে ব্রিজটি পরিদর্শন করা হয়েছে। জেলা থেকে উর্ধতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করবেন। এরপর হেড অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে।