ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে শহরের জেল রোডে টমটম চালক জাফর হত্যা মামলায় মো. কামাল উদ্দিন ভূঞা নামে আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের সদস্যরা। শনিবার (২ নভেম্বর) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় র‌্যাব। গ্রেপ্তার কামাল উদ্দিন ফেনী পৌরসভার পশ্চিম রামপুর এলাকার মৃত আলী নেওয়াজের ছেলে।

র‌্যাব জানায়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে কামাল উদ্দিন আত্মগোপনে চলে যায়। শুক্রবার (১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে গোপন খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে ফেনী পৌরসভার পশ্চিম রামপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব। সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় টমটম চালক জাফর আহম্মদ (৫৩) হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি।

এর আগে জাফর হত্যা মামলায় ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ রহিম উল্লাহ, এমপি নিজাম হাজারীর পিএস হিসেবে পরিচিত ফরিদ মানিক, ফেনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি লিটন এবং ফেনী সদরের ছনুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল হক রিফাতকে গ্রেপ্তার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ মামলায় তাদের প্রত্যেকের ৫ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার কামাল জাফর হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করায় গত ৫ আগস্ট দুপুরে ফেনী শহরের জেল রোডে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয় টমটম চালক জাফর আহাম্মদকে। এ ঘটনায় ২০৫ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১০০-১০৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত জাফরের স্ত্রী আছিয়া বেগম।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৩ আগস্ট শহরের ট্রাংক রোডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটম চালক জাফর আহাম্মদ স্বেচ্ছায় অংশ নেওয়ার খবর জানতে পেরে বাড়ি গিয়ে তাকে হত্যার হুমকি দেন শর্শদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঁইয়া ও কামাল উদ্দিনসহ আরও ১০-১১ জন ব্যক্তি। পরে ৫ আগস্ট দুপুরের দিকে জাফরকে ফেনী শহরের পুরাতন জেল রোডের সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মামলায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফেনী-৩ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।