১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ।। ফেনী ডেস্ক ।।


আজও বাবার কথা মনে করে নিভৃতে কাঁদেন শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সারের মেয়ে শমী কায়সার। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকার রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধা জানাতে বাবার কথা স্মরণ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এসময় রাজাকারদের দেশে এনে ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানান শমী কায়সার। ই কমার্স এসোসিয়েশন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

বাবা শহীদুল্লাহ কায়সারের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আসলে বাবার বিশেষ স্মৃতি আমার নেই। কেননা আমি তখন ছোট, কোনো কিছু বুঝে ওঠার বয়স তখনও হয়নি। যে কারণে অনেক কিছু আমার মনেও নেই। খুব আক্ষেপ লাগে, আফসোস হয়- তখন যদি একটু বড় থাকতাম! তাহলে বাবাকে নিয়ে এখন অনেক স্মৃতি শেয়ার করা যেত। কিন্তু তা আর হবার নয়। মায়ের কাছে যা শুনেছি এতটুকুই।

শমী কায়সার ব্যাথিত হৃদয়ে আরো বলেন, বাবার ব্যবহৃত কোনো কিছু দেখলে আজও বাবাকে ভীষণভাবে মিস করি। বাবার কথা মনে পড়লেই তার ব্যবহৃত জিনিসগুলো উল্টেপাল্টে দেখি। তার কয়েকটি অপ্রকাশিত ডায়েরি আছে আমার কাছে। সেগুলোর পাতায় চোখ বুলাই। ঝাপসা হয়ে আসে দৃষ্টি। তারপরও অক্ষরগুলো পড়ার চেষ্টা করি। বুঝতে চেষ্টা করি, বাবার ভাবনা, প্রতিদিনের দিনলিপি, জীবন দর্শন বলতে গিয়ে শমী কায়সার আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন। বাবার শুন্যতা যে কি, তা এখন বুঝি। মনে পড়লে নিভৃতে কাঁদি।

একটু থেমে নিজেকে সামলে নিয়ে শমী কায়সার পুনরায় বলতে থাকেন, বাবার ব্যবহৃত যে কোনো কিছু স্পর্শ করলেই আমার মনে হয়, বাবাকেই স্পর্শ করছি। তখই দেশ, দেশপ্রেম, ভালোবাসা, স্নেহ, ত্যাগ-তিতিক্ষা, জীবনের চড়াই-উতরাইয়ের কথাগুলো মনে পড়ে। বাবা ছাড়া জীবনে বেড়ে ওঠার প্রতিটি প্রেক্ষাপট আমাকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে। কিন্তু সেখানে দাঁড়িয়ে বাবার জীবন থেকেই আমি প্রেরণা পাই।

শমী কায়সার বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সঠিক তালিকা করতে হবে। একই সঙ্গে রাজাকারদের সঠিক তালিকাও করতে হবে। আমরা যারা শহীদ পরিবারের সন্তান এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক চেতনায় বিশ্বাসী আমাদের সংঘবদ্ধ হতে হবে। পলাতক রাজাকারদের দেশে এনে রায় কার্যকর করতে হবে।