১৯ জানুয়ারি ২০২০ ।। নিজস্ব প্রতিবেদক ।।


জেলার ২০২০-২১ অর্থবছরে উন্নয়নের ধারা ও গতি অব্যাহত রাখতে সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী, জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামগ্রিক অংশগ্রহণ কামনা করেছেন জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান। আজ রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে চলতি বছরের প্রথম জেলা ও উন্নয়ন সমন্বয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।


জেলা প্রশাসক বলেন, মুজিব বষ ‘সেবা বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সেই অঙ্গীকার পূরণে সকল সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সচেষ্ট ও আন্তরিক হতে হবে। এ বছরের প্রত্যেক সরকারি অফিসে সেবা গ্রহীতারা যাতে নির্বিঘ্নে সকল সেবা পেতে পারে সেটি তদারকি করতে হবে। তিনি বলেন, সকলের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে ফেনীকে একটি মডেল জেলা হিসেবে গড়তে আমাদের বেশিদিন লাগবে না।


এসময় পাসপোর্ট অফিসে কোন গ্রাহক যেন হয়রানি শিকার ও দালালচক্রের দ্বারা প্রতারিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসকে নির্দেশ প্রদান করেন তিনি।


সভায় বাখরাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষকে পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন তিনি। অবৈধ গ্যাস সংযোগে জড়িত অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেন। অনুমোদনহীন অতিরিক্ত গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নে জেলা প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার জন্য বাখরাবাদকে নির্দেশ দেন।


সভায় সোনাগাজীর সাবের হাট খালের উপর নির্মিত পোল্ট্রি ফার্মগুলোর বর্জ্যে পানি দূষিত হবার কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জেলা প্রশাসক। এ ব্যাপারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।


সোনাগাজী সরকারি কলেজের প্রস্তাবিত ৬ তলা ভবন নির্মাণের কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু করতে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন। এছাড়া সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মোবাইল টাওয়ার সরানোর জন্য বলেন।


সভায় ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকম বলেন, সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধদের সাথে নিয়ে কাজ করতে হবে। সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো বেশি বেশি প্রচার করতে হবে। এক্ষেত্রে ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ জেলা প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাবে।


সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী লিপটন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কবর বাঁধাই ও তাদের নামে সড়ক নামকরণ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় একটি কাজ। এতে করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সম্মানিত বোধ করবেন। তবে এ কাজটি যাতে সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করে করা হয়, সে ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্তদের আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।


জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্লাহ বলেন, বিগত দিনের তুলনায় বর্তমানে ফেনী জেলা শিক্ষাক্ষেত্রে আরও অগ্রসর হয়েছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম শতভাগ বাস্তবায়নে ও শিক্ষার মান বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইতিমধ্যে আকস্মিক পরিদর্শনে দায়িত্বে অবহেলাকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পর্যায়ে শাস্তি প্রদানের জন্য জেলা শিক্ষা অফিস সুপারিশ করেছে। ২০২০ সালের শিক্ষাবর্ষে বইয়ের চাহিদা প্রেরণের যথাযথভাবে তালিকা প্রেরণের কারণে ফেনীতে প্রায় এক কোটি অপচয় রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোছাঃ সুমনী আক্তারের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ আবদুল মোমেন। এসময় পরশুরাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আলিমসহ ফেনীর ৬ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।