ফেনী জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান বলেছেন, কবি নবীনচন্দ্র সেনের চর্চাকে ছড়িয়ে দিতে হবে। আধুনিক ফেনীর রূপকার এ বিস্ময়কর প্রতিভা সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে জানাতে হবে। আজ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টায় শহরের নবীনচন্দ্র সেন পাবলিক লাইব্রেরির আয়োজনে ‘কবি নবীনচন্দ্র সেনের ১৭৩তম জন্মবার্ষিকী’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বলেন, নবীনচন্দ্র সেন এক বিস্ময়কর প্রতিভা। আধুনিক ফেনীর গঠনে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। সাহিত্যের পাশাপাশি প্রশাসনিক কর্মকান্ডেও নবীনচন্দ্র সেন ঈর্ষনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন। যা আমাদের জন্য অনুসরণীয়। তাঁর চর্চাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। এজন্য স্থানীয়দের প্রথমত উদ্যোগ নিতে হবে।


ফেনীর কীর্তিমান সন্তানদের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই ফেনীতে জহির রায়হান, শহীদ শহীদুল্লা কায়সার, সেলিম আল দীন জন্ম নিয়েছেন। তাদেরকে কেবল বিশেষ দিনে নয়, সব সময়ই স্মরণে রাখতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে তাদের কীর্তি সম্পর্কে জানাতে হবে।


অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোছাঃ সুমনী আক্তারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক পিকেএম এনামুল করিম, সহকারি কমিশনার তাছলিমা শিরিন।

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি ও গবেষক শাবিহ মাহমুদ।


এছাড়া বক্তব্য রাখেন নবীনচন্দ্র সেন পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জসিম উদ্দিন, এডভোকেট সমীর কর, কবি ও প্রকাশক ইকবাল আলম।


অনুষ্ঠানে ফেনীর কবি, সাহিত্যিক ও সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে লাইব্রেরী প্রাঙ্গনে নবীনচন্দ্র সেনের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসকসহ অতিথিরা।

 

উল্লেখ্য, কবি নবীন চন্দ্র সেনের উদ্যোগে ১৮৭৫ সালে নোয়াখালী জেলার একটি মহকুমা হিসেবে ফেনীর যাত্রা শুরু হয়। পরে ১৮৮৪ সালে নবীন চন্দ্র সেন ফেনীর মহকুমা প্রশাসক হিসেবে ফেনীতে আসেন। তার প্রচেষ্টায় রাজাঝির দিঘী সংস্কার, ফেনী বাজার প্রতিষ্ঠা, এনট্রান্স স্কুল (ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়), ফেনীর উপর দিয়ে আসাম-বেঙ্গল রেলপথের নকশা প্রণয়ন করেন। তিনি দুই দফায় প্রায় আটবছর ফেনীতে ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এসময় তিনি অনন্য কর্মদক্ষতায় জঙ্গলাকীর্ণ ফেনীকে মনোরম শহরে পরিণত করেন।


নবীন চন্দ্র সেনের বিখ্যাত মহাকাব্য ‘পলাশীর যুদ্ধ’। এতে নবাব সিরাজ উদ দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে ইংরেজ শাসনের শুরুর বেদনাত্মক আখ্যান ফুটে উঠেছে। এছাড়াও তার ১৫টি কাব্য, উপন্যাস রয়েছে। তার রচিত আত্মজীবনী ‘আমার জীবন’ বাংলা সাহিত্যের একটি আলোচিত স্মৃতিগ্রন্থ।